প্রতিটি মানুষের জীবনে কিছু মুহূর্ত থাকে যা সবকিছু বদলে দেয়। আমার জন্য সেই মুহূর্তটা ছিল যেদিন মোবাইল নাম্বারের শুরুটা বদলে গেল—বাংলাদেশের পরিচিত +880 থেকে সৌদি আরবের +966 হয়ে গেল।
এটা শুধু একটি দেশের কোড পরিবর্তন ছিল না, বরং ছিল জীবনের এক বিশাল বাঁকবদল। সেইদিন আমি বুঝেছিলাম, আমার চেনা-পরিচিত আকাশ, রাস্তা, বন্ধুদের আড্ডা, এমনকি মায়ের ডাকও থাকবে অনেক দূরে। ফ্লাইটের টিকিট হাতে নেওয়ার সাথে সাথে যেন একটা অদৃশ্য ভার আমার কাঁধে এসে বসেছিল—দায়িত্ব, সংগ্রাম আর নতুন জীবনের অজানা পথচলার ভার।
বিদেশের মাটিতে প্রথম কয়েকদিন ছিল অচেনা গন্ধ, অদ্ভুত ভাষা আর সময়ের সাথে লড়াই। বাংলাদেশে রাত হলে এখানে সূর্য তখনও প্রখর, আর আমার মন খুঁজে বেড়াতো মাটির গন্ধ, গ্রামের চায়ের দোকান, ঈদের ভোরের আজান। কাজের চাপে যখন পায়ের ব্যথা অসহ্য হয়ে উঠত, তখন মনে হতো—এই তো সেই জীবন, যা শুরু হয়েছিল এক নাম্বার বদলের মাধ্যমে।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বুঝেছি, এই পরিবর্তন শুধু দূরত্বের না, বরং পরিণতিরও। বিদেশের কষ্ট যেমন আছে, তেমনি আছে স্বপ্ন পূরণের সম্ভাবনা। +966 আমাকে শিখিয়েছে ধৈর্য, সহনশীলতা আর নিজের পরিবারকে ভালো রাখার জন্য নিজের স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দেওয়ার শিক্ষা।
একটা নাম্বার পরিবর্তন হয়তো দেখতে ছোট, কিন্তু এর পেছনে থাকে অসংখ্য স্বপ্ন, ত্যাগ আর লুকানো কান্না। +880 থেকে +966 আমার কাছে কেবল কোড নয়, এটা এক জীবনের গল্প—যেখানে কষ্ট আছে, ভালোবাসা আছে, আর আছে ফিরে যাওয়ার আশা।
আসলে কি ফিরে যেতে পারব?
আপনার মতামত লিখুন :